• মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন
Headline
শ্যামনগরে এক হরিণ শিকারীকে আটক যশোরে পদোন্নতি বঞ্চিত বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের কর্মবিরতি শার্শায় মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ মাদক মামলার আসামি গ্রেফতার আমেরিকা থেকে এই প্রথম আনা ৬০৮৭৫ টন গম মোংলা বন্দরের বহিরনোঙ্গরে খালাস “মৎস্য খাতে নতুন উদ্যম—মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ কর্মকর্তাদের ব্যতিক্রমী গ্র্যান্ড সেলিব্রেশন” একই দিনে খুলনায় চারজনকে হত্যা শহর জুড়ে আতঙ্ক খুলনা-বরিশাল অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট , বাস মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতি তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট, ধানের শীষের প্রচারণায় মনোনয়নপ্রত্যাশী জুলফিকার আলী উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় জরুরি অভিযোজন উদ্যোগের আহ্বান শ্যামনগরে অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে বিষ দিয়ে সুন্দরবনে মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৯

সুন্দরবনে বনদস্যু শরীফ বাহিনী মুক্তিপনের দাবিতে ৫ জেলেকে অপহরন করেছে, মুক্তিপণে মুক্ত ৩ জেলে,এখনো ২ জেলে জিম্মি,উৎকন্ঠায় স্বজনরা

খুলনা ভিশন ডেক্স / ২১৫ Time View
Update : রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫

আবু-হানিফ,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওযা বাগেরহাটের শরণখোলার পাঁচ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে বনদস্যু শরীফ বাহিনী। এদের মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে বাড়ি ফিরেছেন তিন জেলে। এখনো দুই জেলে জিম্মি রয়েছেন দস্যুদের হাতে। জিম্মি দুই জেলের মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা।

দরিদ্র জেলে পরিবারের পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। যে কারণে তাদেরকে মুক্ত করাও সম্ভব হচ্ছে না। উৎকণ্ঠায় রয়েছেন জিম্মি জেলেদের স্বজনরা। গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের তেঁতুলবাড়িয়া ও হয়লাতলা এলাকা থেকে তাদেরকে অপহরণ করে বনদস্যু শরীফ বাহিনী। এসময় জেলেদের আহরতি মাছও লুটে নেয় দুস্যুরা।
জিম্মি থাকা জেলেরা হলেন শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের সেলিম মল্লিকের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে রাকিব। মুক্তিপণ দিয়ে ফেরা জেলেরা হলেন একই গ্রামের লাল মিয়া হাওলাদারের ছেলে রফিকুল ইসলাম, হাসেম হাওলাদারের ছেলে ইসমাইল এবং ছবদার তালুকদারের ছেলে বাদল। এসব জেলেদের পরিবার ও মহাজনরা কেউ ২০ হাজার কেউ ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, সুন্দরবনে নতুন করে দস্যুতা শুরু হওয়ায় আতঙ্কে পড়েছেন বনের বিভিন্ন নদী ও খালে মাছ ধরায় নিয়োজিত জেলেরা। অন্যদিকে, কোন জেলেকে আবার কখন দুস্যুরা অপহরণ করে নিয়ে যায়, সারাক্ষণ সেই আতঙ্ক তাড়া করছে ওইসব জেলেদেরে মহাজন ও পরিবারকে। সুন্দরবনকে আবারও দস্যুমুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জিম্মিদশা থেকে ফিরে আসা জেলে রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তেঁতুলবাড়িয়া নদীতে মাছ ধরছিলেন। তাদের ৪-৫টি নৌকা কাছাকাছি দূরত্বে থেকে নদীতে জালা ফেলে তারা নৌকায় অবস্থান করছিলেন। রাত অনুমানিক ৯টার দিকে বনদস্যু শরীফ বাহিনীর ৮ জন শসস্ত্র দস্যু ইঞ্জিনবিহীন একটি নৌকায় নিঃশব্দে তাদের জেলেবহরে এসে হানা দেয়। তাদের প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এসময় অস্ত্রের মুখে তিন জেলেকে তাদের নৌকায় তুলে নেয় দস্যুরা। নৌকায় থাকা মাছও তুলে নিয়ে যায়। যাবার সময় নৌকার অন্য জেলেদের কাছে তাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে যায় দস্যুরা। মুক্তিপণ পেয়ে দস্যুরা তাদেরেকে শুক্রবার রাতে অন্য একটি জেলে নৌকায় তাদেরকে তুলে দেয়।
জিম্মি জেলে সাদ্দামের মা মঞ্জু বেগম জানান, দস্যুদের দেওয়া মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন সাদ্দামের বাবা। দস্যুদের কাছে এখন সাদ্দাম ও রাকিব জিম্মি রয়েছেন। তাদের ছাড়াতে হলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। তারা গরীব মানুষ, এতো টাকা কোথায় পাবেন। তার পরও ৫০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছি। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি দস্যুরা। মুক্তিপণ দিতে না পারলে দুই জেলের ভাগ্যে কী ঘটবে সেই দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মৎস্য ব্যবাসয়ী জানান, দীর্ঘদিন সুন্দরবন শান্ত ছিল। বর্তমানে কয়েকটি দস্যু বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত জেলেদের অপহরণ করছে। এরই মধ্যে তিন জেলেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছেন তারা। একনো দুই জেলে জিম্মি রয়েছেন। সুন্দরবনের মধ্যে জেলেরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। লাখ লাখ টাকা চালান খাটিয়ে মহাজনরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। দ্রুত এসব দস্যু বাহিনী নির্মূলে কঠোর অভিযান না করলে আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে সুন্দরবন।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সুন্দরবনের বেশ কয়েকটি দস্যু বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে কোস্টগার্ড। অস্ত্র-গোলাবারুদসহ এসব বাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে আটক ও জিম্মি জেলেদের উদ্ধার করা হয়েছে। দস্যুতাসহ সুন্দরবনের অপরাধ দমনে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা