খুলনা জেলা বিএনপির সদ্যঘোষিত ৬১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর চলছিল আলোচনা।তবে অনেক নেতাকর্মী মাঠে থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের আগলায়ে রেখেছেন সেই সকল নেতাকর্মীরা ছদ্ম ঘোষিত আহবায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়ায় খুশি সর্বস্তরের সাধারণ কর্মীরা। তবে নিষ্ক্রিয় কিছু নেতা কর্মী স্থান পাওয়ায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছেন নেতাকর্মীদের মাঝে। এনিয়ে স্থানীয় জাতীয় বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রচারের পর নজরে আসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই ধারাবাহিকতায় এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।এরমধ্যে ২০১৬ সালের ২৮ শে ফেব্রুয়ারি দৈনিক সময়ের খবরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর শোডাউনে জেলা বিএনপির সদস্য দপ্তর সম্পাদক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়, জিএম কামরুজ্জামান টুকুর নামে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়
১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর একই পত্রিকা একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয় কয়রা যুবলীগের শফিকুলের নিয়ন্ত্রণে চলছে কয়রা বিএনপির একাংশ। একটা নিউজে এমএ হাসান ও আকবর হোসেনকে অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া খুলনার ও জাতীয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিউজ ও বিগত ১৬ বছরে কোন মামলা হামলা শিকার হননি সুবিধাবাদী নেতাকেও রাখা হয়েছে এই কমিটিতে বলে অভিযোগ মাঠে থাকা নেতাকর্মীদের। বুধবার রাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বিতর্কিত নেতাকর্মীরা। গেল ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অন্যায় ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে যারা শোকজ হয়েছেন তারাও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। একাধিক নেতাকর্মীর অভিযোগ, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী খুলনা জেলায় তৃণমূলে থাকা রাজপথের কর্মীরা যারা দীর্ঘদিন মামলার আসামি হয়ে রাজপথে ছিলেন তাদের অনেকেই কমিটিতে স্থান পাননি। এ নিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ঘোষিত কমিটির , ৬১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির ১৮ জনই রূপসা এলাকার। এই এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির শীর্ষ এক নেতার বাড়ি। তার ভাই এবং বন্ধুও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এছাড়া কয়রা ঘের দখল মামলার আসামি সাইদ বিশ্বাস, রূপসার টিএসবি ইউনিয়নে নৌকার পক্ষে প্রচারণা করা কামরুজ্জামান টুকু, সামাজিক মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হওয়া কপিলমুনির শামসুল আলম পিন্টু, কয়রায় আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয় এমএ হাসান, রেন্ট এ কার ব্যবসায়ী আতিক, সমিতির ব্যবসায়ী রবিউল, রাজপথে না থাকা গাজী তফসির, ডুমুরিয়ার সন্তান আমেরিকান প্রবাসী টিংকু রহমান, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে শোকজ হওয়া জিএম রফিকুল, বিগত ১০ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় অহিদুজ্জামান রানাসহ অসংখ্য নেতাকর্মী জেলা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, কমিটি দেখে আমরা হতাশ। যারা আওয়ামী লীগের সময়ে রাজপথে ছিল, মামলা ও হামলার স্বীকার হয়েছিল তাদের অনেকেই কমিটিতে স্থান পাননি। এমনকি দলের নির্দেশনা অমান্য করে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, বিভিন্ন কারণে সমাজে যারা বিতর্কিত তারাই পদ পেয়েছে। আমেরিকা প্রবাসী ও জেলা বিএনপির সদস্য টিকু রহমান বলেন, আমি ২৭ বছর ধরে বিদেশে আছি। তবে প্রতিবছরই দেশে যাই। মহানগরের ছাত্রনেতা ছিলাম। করোনার সময়সহ বিভিন্ন সময়ে বিএনপির পাশে থেকে নেপথ্যে আমি কাজ করেছি।জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান বর্তমান কমিটির বিতর্কিতদের নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে কমিটি প্রকাশের পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাজনীতিতে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবু। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন। বক্তব্য নেওয়ার জন্য জেলা কমিটির বর্তমান আহ্বায়ক মনিরুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেনি। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা বিএনপির আগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর গত ১৩ ডিসেম্বর খুলনা জেলা বিএনপির তিন সদস্যের নতুন আহ্বায়ক (আংশিক) কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে মনিরুজ্জামান ওরফে মন্টুকে আহ্বায়ক, শেখ আবু হোসেন ওরফে বাবুকে সদস্য সচিব এবং মোমরেজুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।