খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন মজিদ সরণির একটি বহুতলবিশিষ্ট ভবনে গিয়ে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। জিডিতে ‘সুলতান টাওয়ার’ নামের ওই ভবনের ভাড়াটিয়াদের নেমে যাওয়ার হুমকি ও ভবনটি আগুন ও গুঁড়িয়ে দেয়াসহ কেয়ারটেকারকে তুলে নেয়ার কথা বলে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করা হয়।
খুলনা মজিদ সরণির ১৩৩/ক নম্বর হোল্ডিংয়ের সুলতান টাওয়ারের হিসাব কর্মকর্তা রাজা মিজানুর রহমান জিডিতে উল্লেখ করেন, ভবনটিতে সমপ্রতি কিছু যুবক এসে ভাড়াটিয়াদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। তারা নিজেদেরকে ছাত্র সমন্বয়ক দাবি করছে। প্রায়ই ওইসব অপরিচিত যুবক শ্রেণির লোকজন এসে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে বলে, ‘আপনাদেরকে এখান থেকে নেমে যেতে হবে। এই ভবন আমরা দখলে নেবো। না নামলে আপনাদের অনেক ক্ষতি হবে’ ইত্যাদি। এ ছাড়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন মোবাইল থেকে ভবনের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা অনেকের কাছে ফোন দিয়েও হুমকি দেয়। গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি ভবনটিতে এসে কয়েকজন যুবক হুমকি দিয়ে যায়। এরপর ৩রা মার্চ আবার এসে ভবনের কেয়ারটেকার মনিরকে তুলে নিতে চায়। তখন তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে হাত-পা ধরে রক্ষা পাওয়া গেলেও তারা যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে বলে যে, এ ভবনটি তাদেরকে ছেড়ে দিতে হবে। তা-না হলে ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে। এমনকি বুলডোজার দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। বৃহস্পতিবার তারাবীহ চলাকালে ১০/১৫জনের একটি দল এসে টাওয়ারের সামনে চিৎকার-চেঁচামেঁচি করে। ওইসময় ভবনে যারা উপস্থিত ছিল তারা আতংকিত হয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, খুলনায় সমপ্রতি ছাত্র পরিচয় দিয়ে বাড়ি, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই মব তৈরির ঘটনা ঘটছে। আওয়ামী লীগ নেতা, সমর্থক ও ব্যবসায়ীদের অফিসে যাচ্ছে ছাত্র পরিচয় দেয়া যুবকরা। চাঁদা দেয়ার পরই কেবল মুক্তি মিলছে। যারা চাঁদা দিচ্ছে না, তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে।
সমপ্রতি নগরীর শিববাড়ী মোড়ে মানববন্ধন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগর সদস্য সচিব জহুরুল তানভীরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে বহিষ্কার দাবি করেন কমিটির কয়েকজন নেতাকর্মী। এই মাসের প্রথম সপ্তাহে খুলনার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাদের বসতবাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান আশিক, যুগ্ম সদস্য সচিব সৈয়দ আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব রাকিব হাসান সুজন ওরফে রাব্বি ও সংগঠক সাফওয়ান ইফাজকে বহিষ্কার করা হয়।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো চাঁদাবাজকে ছাড় দেয়া হবে না। যত বড়ই শক্তিশালী হোক তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।