লোহাগড়ায় সংখ্যালঘুর জমি জোর দখল করে নিঃস্ব করার অভিযোগ নায়েব ইউনূসের বিরুদ্ধে
মনির খান লোহাগড়া প্রতিনিধি।
নড়াইলের লোহাগড়া পৌর সভার জয়পুর গ্ৰামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি জালিয়াতি ও জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব ইউনুসের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি নিজ পরিবারের নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সংখ্যালঘুদের জমি দখল করে নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মনিমোহন জানান, লোহাগড়া পৌরসভার জয়পুর মৌজার ৫৫০ নম্বর খতিয়ানের ৩৪৩২ নম্বর দাগের ৫২ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে রয়েছে। এই জমির সিএস ও এসএ রেকর্ড তার পূর্বপুরুষের নামে রয়েছে। কিন্তু লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নায়েব ইউনুস ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্ত্রী, মেয়ে, জামাই ও ছেলের নামে ভুয়া দলিল তৈরি করে জমিটি জবরদখল করেছেন। উক্ত জমি নিয়ে নড়াইল জজ কোর্টে ৪৯/১২ নম্বর দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে। নায়েব ইউনুসের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। শামুকখোলা মৌজার একটি জমির মিউটেশন করতে গিয়ে তিনি ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে ৫ শতাংশ জমিকে ৯ শতাংশ দেখিয়ে মিউটেশন সম্পন্ন করেছেন। প্রকৃত মালিক আব্দুল মান্নান সরদারের দলিল (নং ১১৫৮/২০১০) থাকার পরও ঘুষের বিনিময়ে ভুয়া দলিল (নং ৬২/২৫, রেজিস্ট্রি তারিখ ০৩/০১/২০২৫) ব্যবহার করে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। এছাড়াও, নায়েব ইউনূস নোয়াগ্রাম ইউনিয়নে কর্মরত থাকাকালীনও তিনি একাধিক জালিয়াতির সাথে জড়িত ছিলেন। শামুকখোলা মৌজার ৪৯৬ নম্বর আর এস খতিয়ানের একটি জমির মালিক রিপন খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, পৈতৃক সম্পত্তির মিউটেশন করতে গেলে নায়েব ইউনুস ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন, তার ছেলে নয়ন আরও ৭ হাজার টাকা নেন। এক বছর পার হলেও এখনো পর্যন্ত মিউটেশনের কাজ হয়নি। মাধবাটি মৌজার শহীদ বিশ্বাসের ছেলে হাসিব বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, এক বছর আগে দাখিলা কাটানোর জন্য তিনি নায়েব ইউনুসকে ২৫ হাজার টাকা দেন, কিন্তু এক বছরেও কাজটি হয়নি। একাধিকবার তাগাদা দিলেও তিনি শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন। এমনকি সাধারণ মানুষও ভূমি সংক্রান্ত কাজে তার কাছে গেলে অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয়, ঘুষ না দিলে হয়রানির শিকার ও হতে হয়। ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, ভূমি অফিসে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করার জন্য প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক। লোহাগড়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ এই জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উক্ত বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নায়েবের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি উল্লেখিত ঘটনা অস্বীকার করেন।